সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Whatsapp

Facebook

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমরাবতীর সন্ধানে

ভারতবর্ষের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের পালনাড়ু জেলায় কৃষ্ণা নদীর তীরে অমরাবতী গ্রাম অবস্থিত এবং এখানে একটি প্রাচীন বৌদ্ধ স্তূপের অবশেষ লক্ষ্য করা যা বর্তমানে এই গ্রামের নামেই পরিচিত। ঐতিহাসিকদের মতে অমরাবতী স্তূপের নির্মাণকার্য মৌর্য যুগে সম্রাট অশোকের আমলে শুরু হয় এবং পরবর্তী সময়ে সাতবাহন শাসকদের আমলে এই স্তূপের রূপ পরিবর্ধিত ভাবে নির্মিত হয়েছিল।  রমাপ্রসাদ চন্দ ১৯২৫ সালে ‘এপিগ্রাফিয়া ইন্ডিয়া’তে তাঁর প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এই প্রত্নক্ষেত্র উৎখননের সময় প্রাপ্ত ৫৮টি লেখের কথা উল্লেখ করেন। তিনি তারিখ বিহীন উৎসর্গকৃত এই লেখগুলির অক্ষরের ধরন ও ভাষার বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এই স্তূপের সময়কাল ছিল খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতক পর্যন্ত।   বিপুল সংখ্যক মৌর্য আমলের রূপোর ছাপাঙ্কিত মুদ্রা ও একটি ভগ্ন স্তম্ভলেখ অমরাবতী থেকে পাওয়া গিয়েছিল এবং এর থেকে ঐতিহাসিকরা মনে করেন এই স্তূপের নির্মাণ মৌর্য যুগের গোড়ার দিকে হয়েছিল । তবে নিম্ন কৃষ্ণা উপত্যকায় মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর এই অঞ্চল সদ বংশীয় শাসকদের অধীনে আসে, বিভিন্ন লেখ ও মুদ্রা থেকে এই বংশের পাঁচজন...

চৈতন্য যুগের শিল্পকলার বিবর্তন

আমরা জানি প্রত্যেক জনজাতির ধর্ম ও বিশ্বাসের মধ্যে অন্তর্নিহিত থাকে সেই জনজাতির প্রকৃত সত্তা। উদাহরণ হিসেবে যদি আমরা বিশ্বকর্মা পুজোর কথা আলোচনা করি তাহলে লক্ষ্য করা যাবে, বাঙালির শিল্প ও বিকাশের দিকটিতে এই পুজো ইঙ্গিতবাহী এবং বাঙালির বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক ভিত্তি। তবে, শিল্প বলতে যে কলকারখানা বোঝায় এমনটা নয় এর বাইরেও আর একটা শিল্প আছে। সেই শিল্পকে ইংরেজিতে বলে আর্ট এবং ধ্রুপদী বাংলায় অভিহিত করা হয় “কলা” নামে। প্রাচীন বাংলায় শিল্পকলা মে অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল তার প্রমাণ আমরা সমগ্র বাংলার বিভিন্ন অংশে লক্ষ্য করতে পারি। তার উদাহরণ সহযোগে এবার আমরা চৈতন্য যুগে বাংলার শিল্পকলা সম্পর্কে আলোচনা করব। ষড়ভুজ রুপে চৈতন্যদেব আমরা সকলেই জানি, মধ্যযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির একজন হলেন চৈতন্যদেব। চৈতন্যদেবের আবির্ভাব থেকে অন্তর্ধান পর্যন্ত সময়কাল ১৪৮৬ খৃষ্টাব্দ থেকে ১৫৩৩ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত। এই সময়কালটি সকল বাঙালির জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলার ইতিহাসে লক্ষ্য করা যায় মধ্যযুগে, বিশেষ করে সেন যুগের পতনের পরে বাংলায় চরম ভাবে বৈদিক বর্ণবাদ এতটাই মাথাচাড়া দিয়েছিল যে, সেই সময় এর প্রভাবে প্রত্যেক বা...

স্বামীজীর ভাবনায় নীলাম্বরের বাগানবাড়ি

গঙ্গার দুই তীরে ছড়িয়ে থাকা রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের দুটি ঐতিহাসিক স্থান আজও শ্রদ্ধা ও স্মৃতিরক্ষার এক অনন্য নিদর্শন। পূর্ব তীরে কাশীপুর উদ্যানবাটী, যেখানে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর জীবনের শেষ ২৪৮ দিন অতিবাহিত করেছিলেন। অপর দিকে পশ্চিম তীরে অবস্থিত নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের বাগানবাড়ি, যা শ্রীরামকৃষ্ণোত্তর যুগে বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। বর্তমানে ‘পুরনো মঠ’ নামে পরিচিত এই বাড়িটি জননী সারদাদেবী, ভগিনী নিবেদিতা ও স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি আগলে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। এখানেই বাস করে শ্রীমা সারদাদেবী আধ্যাত্মিক আনন্দ লাভ করেছিলেন, যা দেখে স্বামীজি ভবিষ্যতে বেলুড়ে শ্রীমায়ের জন্য স্থায়ী আবাস গড়ে তোলার সংকল্প করেছিলেন। রামকৃষ্ণ মঠ, কাশীপুর এই ঐতিহাসিক বাগানবাড়ির প্রাথমিক মালিক ছিলেন এক ইংরেজ, তবে ঊনবিংশ শতকের সত্তরের দশকে বিশিষ্ট আইনজীবী নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে এটি ভারতীয় মালিকানায় আসে। কলকাতার বিডন স্ট্রিটে বসবাসকারী নীলাম্বর ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রধান বিচারপতি এবং পরে সে রাজ্যের রাজস্ব সচিব ও প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন। প্রায় দুই দশক কাশ্মীরে কাটানোর পর তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন এবং ১৮৯৬ সালে কলক...